মাওয়া ঘাটে এসে ফেরিতে উঠল ওরা। ওরা তিনজন। আব্বু-আম্মু আর রাহাত। ‘মাওয়া’ নামটা রাহাতের বেশ পছন্দ। কারণ, ‘মাওয়া’ জানড়বাতের একটি নাম! তাই এখানে এলেই অন্যরকম ভালো লাগায় তার মন ভরে ওঠে। ফেরির সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেল তারা। সেখানে বসার সুন্দর জায়গা আছে। জানালা দিয়ে দেখা যায় প্রকৃতির রূপ! পদ্মার অপার সৌন্দর্য! ঢেউয়ের নাচন! স্রোতকে দু’ভাগ করে ছুটে চলা স্পিডবোট! নৌকা! আরও কত কী! আজ চোখে পড়ল অপরূপ এক দৃশ্য। ডানা মেলা গাঙচিল। ঝাঁকে ঝাঁকে। ওরা উড়ে এসে ঢেউ ছুঁয়ে যায়! এমন দৃশ্য আগেও দেখেছে রাহাত। তবুও আজ নতুন মনে হলো যেন। নতুন ভাবনায় দুলে উঠল সে। ভাবল, ওরা কত সুখী! কত স্বাধীন! আহা! সে-ও যদি এভাবে উড়তে পারতো। ইচ্ছেমতো। যেখানে খুশি সেখানে!
রাহাত তার আব্বুকে বলে ফেলল মনের কথাটা। আব্বু বললেন, তুমিও তো স্বাধীন! এই যে, ইচ্ছে হলেই হাঁটতে
পারছো। দৌড়াতে পারছো। খেতে পারছো। ঘুমোতে পারছো। আর কী চাই? আবার ইচ্ছেমতো সাজাতে পারছো কল্পনার পৃথিবী। স্বপ্নের জগৎ! আল্লাহ তো বলেই দিয়েছেন, “আমি মানুষকে পথ দেখিয়েছি। হয় সে কৃতজ্ঞ হবে। নয় অকৃতজ্ঞ হবে।” (সূরা দাহর : ৩) ভালো পথে গেলে জানড়বাত। খারাপ পথে গেলে শাস্তি। এবার তোমার ইচ্ছা যেদিকে খুশি সেদিকেই যেতে পারো! এর চেয়ে বড় স্বাধীনতা আর কী আছে?
সত্যিই তো! রাহাতের গাঙচিল মন আবার ডানা মেলল ভাবনার আকাশে। ডানা মেলে উড়ছে তো উড়ছেই। উড়ে উড়ে খুঁজে ফিরছে তার পথ। কোন্ পথে যাবে সে? নিশ্চয় সুন্দরের পথে। জান্নাতের পথে।

Share.

মন্তব্য করুন