আসিফ মাহমুদ একজন কৃতি ছাত্র।
কৈশোরের শেষ ধাপে পৌঁছা এই তরুণের ডাকনাম শুভ। জন্ম রাজশাহীতে, ২০০২ সালের ২৭ মার্চ। তার পিতা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-প্রধান চিকিৎসক, বিশিষ্ট কথাশিল্পী ও অনুবাদক নাজিব ওয়াদুদ। মা ফারজানা আফরোজ গৃহিণী। শুভ ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। সে পিএসসি এবং জেএসসি পরীক্ষাতেও বৃত্তি পেয়েছিল। সে বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত।
শুভ, তুমি কেমন আছ?
আল্লাহর রহমতে আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালই আছি।
এবার তুমি রাজশাহী ইউনিভার্সিটি স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছ। নম্বরও পেয়েছ অনেক। কত নম্বর পেয়েছ?
১২৪৪।
তোমার এই বিশাল সাফল্যের কৃতিত্ব কাকে দেবে?
আমি আমার সাফল্যের জন্য মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ। এরপর এই কৃতিত্বের দাবিদার সব আগে আমার আম্মু ও আব্বু। তারপর আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষকগণ। বিশেষ করে আমার দু’জন গৃহশিক্ষকের কথা আলাদা করে বলা উচিত। তারা হলেন মতিউর রহমান ও মাসুদ রানা। এরা দু’জনেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র। তোমার কোনো কৃতিত্ব নেই? হ্যাঁ, অবশ্যই আছে। আমি চেষ্টা করেছি, পরিশ্রম করেছি, আব্বু-আম্মু ও শিক্ষকগণ অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতা করেছেন। আর আল্লাহর রহমত তো ছিলোই। সব মিলিয়েই তো এই সাফল্য!
তোমার মতে ভাল ফল করার জন্য একজন ছাত্রের কী করা উচিত?
পড়াশোনার জন্য বেশি বেশি সময় দেয়া উচিত। পরিশ্রমের বিকল্প নেই।
বর্তমানে তুমি রাজশাহী কলেজে অধ্যয়নরত। তুমি তোমার জীবনের লক্ষ্য স্থির করেছ?
জীবনের লক্ষ্য বলতে প্রমত আমি একজন ভাল মানুষ হতে চাই। একই সাথে আমি একজন ভাল চিকিৎসক হতে চাই। তোমার আব্বু চিকিৎসক বলে? না, ঠিক তা নয়। ইদানীং আমার মনে হচ্ছে, জীবিকা অর্জনের পাশাপাশি একজন চিকিৎসক যত সহজে মানুষের উপকার করতে পারেন- অন্য কেউ তত সহজে পারেন না। এটা আমাকে আকর্ষণ করছে।
তোমার পিতা তো বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট কথাশিল্পী। তাঁর কোন গল্পটা তোমার বারবার পড়তে ভালো লাগে?
সত্যি বলতে কি আব্বুর সব লেখা আমার এখনো পড়া হয়নি। নিজের ক্লাসের পড়াশোনা নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকতে হয়। দ্বিতীয়ত, আব্বু মূলত বড়দের জন্যেই লিখেছেন। আমি তো এতকাল ছোটই ছিলাম। এখন পড়ব একে একে।
কেন, তোমার আব্বু তো ছোটদের জন্য ছড়া লিখেছেন, অনুবাদ করেছেন, সায়েন্স ফিকশন লিখেছেন, ছোটগল্পও লিখেছেন বেশ কিছু।
শিশুতোষ লেখাগুলো মোটামুটি পড়েছি। আব্বুর ‘ঘুমপাড়ানী’, ‘রয়াল ব্যাঙ্গল টাইগার’, প্রভৃতি শিশুতোষ গল্প এবং অনুবাদ কিশোর উপন্যাস ‘স্বর্ণ নদীর রাজা’ আমার ভাল লাগে।
অবসরে তুমি কী করো?
অবসরই তো নেই, কী করব! তবু যখনই একটু অবসর পাই টিভিতে ক্রিকেট খেলা দেখি, বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করি, আড্ডা দেই- এই আরকি। ধরা-বাধা নিয়ম নেই।
খেলার প্রতি তোমার আগ্রহ অনেক। বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে কী স্বপ্ন দেখ?
বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে অনেক দূর যাবে বলে আমার বিশ্বাস। তবে সেজন্য ক্রিকেটের সংগঠক ও খেলোয়াড়দের আরো বেশি প্রফেশনাল হওয়া উচিত।
তোমার মত অনেক শিশু-কিশোর-তরুণ আছে যারা অর্থ সংকটে পড়তে পারছে না। তুমি কর্মজীবনে গিয়ে এইসব তরুণদের জন্য কী করতে চাও?
আমার জানাশোনাদের মধ্যেও অনেকে এরকম আছে। খুব খারাপ লাগে। ভবিষ্যতে আল্লাহ যদি আমাকে প্রতিষ্ঠা দেন, সাধ্য মতো করব ইনশাআল্লাহ।
কিশোর পাতার বন্ধুদের উদ্দেশ্যে তুমি কিছু বলবে?
বন্ধুরা, ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের যোগ্য ও দক্ষ হিসেবে প্রস্তুত করতে হবে। পড়াশোনাই এখন আমাদের প্রধান কাজ। সেজন্য অনেক পরিশ্রম করতে হবে।
তোমাকে ধন্যবাদ। আল্লাহ তোমাকে আরো-আরো সাফল্য দান করুন, ভাল রাখুন এই দোয়া রইল।
আপনাকেও ধন্যবাদ। আল্লাহ আপনাকেও কল্যাণ দান করুন।
গ্রন্থনা : শাহাদাত সরকার