নয়ন পরিবারের সাথে রাগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যাচ্ছে কোন এক অজানা গন্তব্যে। রেলওয়ে স্টেশনে বসে রেলের জন্য অপেক্ষা করছে নয়ন। হয়তো কোন এক সময় ট্রেন আসবে আর সেই ট্রেনে করে সে চলে যাবে কোন এক দূর অজানায়। নয়নের মাথায় রাজ্যের গভীর চিন্তা, প্লাটফর্মে বসে অপেক্ষা করছে, এমন সময় একটি শিশু যার জীর্ণশীর্ণ পোশাক, জরাজীর্ণ শরীর, মলিন মুখ এলোমেলো চুল- নয়নের কাছে হাত পাতলো। নয়ন তাকে দেখে মায়া হলে জিজ্ঞেস করলো তোমার কে কে আছে? আমার মা, একটি বোন, একটি ভাই আছে আর আমার বাবা মারা গেছেন আমি যখন অনেক ছোট। তুমি থাকো কোথায়? আমি এই স্টেশনেই থাকি মা ও ভাইবোনের সাথে। জীর্ণশীর্ণ পোশাকের এই পথশিশুটিকে দেখে নয়নের চোখ জলে টলমল করতে লাগলো। তাকে জিজ্ঞেস করলো‘ তোমার কাপড় নেই?’
‘দু’মুঠো খেতে পাই না, কাপড় কোথা থেকে কিনব?’
নয়ন চোখের জল আর ধরে রাখতে পারলো না। তাকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে পাশের একটি মার্কেট থেকে তার জন্য কাপড় কিনে দিয়ে তাকে বিদায় করলো নয়ন। আর মনে মনে ভাবলো হায়! আমি আমার বাবার সাথে রাগ করে চলে এলাম আমার কিছু চাহিদা মেটাতে পারেনি বিধায়। অথচ এই শিশুটা তার বাবাকে হারিয়ে আজ রেলওয়ে স্টেশনে দিন কাটাচ্ছে। যার এখন স্কুলে যাওয়ার সময়, যার এখন একটু খেলার সময়, অথচ একমুঠো খাবার খাওয়ার জন্য সে মানুষের কাছে হাত পেতে বেড়াচ্ছে। চোখ মুছে নয়ন বাড়ির দিকে যাত্রা করল।

Share.

মন্তব্য করুন