‘ওই মা! আর ইশকুলে যামু না।’
‘ক্যান রে বাজান? কী হইছে?’
‘আমার শার্ট লইয়া হগলে হাসাহাসি হরছে। একটা নতুন শার্ট কিন্যা দিবা কবে মা?’
মায়ের চোখ ছলছল করে ওঠে। ‘এই তো বাজান! মালিকে কইছে ক’দিনের মইধ্যে বেতন দিয়া দিবো! আয় তুই খাইয়া লো।’
‘আমারে খাওয়ায় দিবা না মা?’
‘তুই কবে নিজের হাত দিয়া খাইছোস? আয় দেহি আয়! হাড়াহাড়ি খাইয়্যা পড়তে বয়!’
‘মা! আমারে বিশটা ট্যাহা দিবা।’
‘ট্যাহা কি করবি তুই?’
‘ঐ মিষ্টি খামু।’
‘যা দিবানি।’
মনে মনে হাসতেছে রনি। ভাবছেÑ মা জানে না এই টাকা দিয়ে মার্বেল কিনবো। একটা চুকি, একটা ভোম, আরেকটা কালি বুড়ো। আর বাকিগুলা খেলার তা।
মফি কি করে মার্বেল জিতে এবার দেখবো। আমার লগে রংবাজি? ওরে কান্দায়া ছাড়বো। আমারে বাকি দেয় না। ভাবতে ভাবতে খাওয়ায় মনযোগ দেয় রনি।
‘মা, তুমি খাইছো?’
‘হ খাইছি বাজান! তুই খাইয়্যা উঠ! এই দ্যাখ, তোর লাইগ্যা এই মাছের টুকরা থুইছি।’
‘উহু! খামু না! তুমি খাও নাই। মিছা কথা কও ক্যা? এইডা তুমি খাবা, বুঝছো? আমি মাছ খামু না। আর ভাত অদ্দেক থুইয়া দাও, এডি খামু না। তুমি খাবা!’
‘তুই এইডা খাইবি না ওইডা খাইবি না, আমার হাতে ছাড়া খাইবিই না…।’
‘তোর বৌ বাইত্যে আইলে করবিডা কী! তোর বৌ তো তোরে ঝাড়– দিয়া পিডাইবো!’
মা-ছেলে একসাথে হেসে ওঠে! তাদের হাসিতে ছোট্ট ঘরটাতেও আনন্দের স্বর্গ নেমে আসে।

লেখক :
শিক্ষার্থী, নটরডেম কলেজ, ঢাকা

Share.

মন্তব্য করুন