একদা মৌমাছি এবং ভনভনে মাছির মাঝে দেখা হলো। প্রথমেই ভনভনে মাছি জোর গলায় বললো, বন্ধু! তোমরা তো খুব এদিক সেদিক চক্কর দিয়ে ঘুরে বেড়াও। আজ তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে। আজ আমরা দুজন নিজেদের গুণাগুণ বর্ণনা করবো, দেখা যাক কারা বেশি শ্রেষ্ঠ। একথা বলেই ভনভনে মাছি বলা শুরু করলো। বললো : ১. আমরা পৃথিবীর সব রকম জিনিসের স্বাদ গ্রহণ করি। যেমন- নানান রকম ফল, হরেক রকম সুস্বাদু খাবার, মজার মজার মিষ্টান্ন এমনকি প্রস্রাব পায়খানা ও পচা ডোবার ময়লা আবর্জনার স্বাদ গ্রহণ করতেও বাকি নেই। ২. আমরা যেখানে সেখানে বাসা বাঁধি, তা ভাল হোক আর মন্দ হোক, কারণ গোটা দুনিয়াটাই তো আমাদের। ৩. আমরা বিভিন্ন জায়গায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলে বসি, যেন কেউ আক্রমণ করলে প্রাণ নিয়ে পালাতে পারি। একসাথে হই হুল্লোড় করে যেন মরতে না হয়। এবার তোমাদের গুণাগুণ বলো দেখি।
মৌমাছি বললো : ১. বন্ধু! তোমরা তো ভালো-মন্দ সব জিনিসের স্বাদ নিয়ে থাকো। নোংরা জায়গা থেকে এসে আবার ভালো খাবারে বস। এ খাবার কোন মানুষ খেলে তো তার অসুখ হবে। এটা তো মুনাফিকি স্বভাব। আমরা হাজার হাজার প্রজাতির ফুল থেকে সুবাস গ্রহণ করি এবং মধু সংগ্রহ করি। তা নিজেরা পান করি আবার সংরক্ষণ করে রাখি। কোন মানুষ তা খেলে রোগ থেকে মুক্তি লাভ করে। আর অপরকে সাহায্য করা তো মুমিনেরই কাজ। ২. ভাল মন্দ সব জায়গায় বসা তো মুনাফিকের স্বভাব। তারা মসজিদেও যায় গানের আড্ডাতেও যায় আবার মদের আড্ডাতেও বসে থাকে। আমরা সব চেয়ে উন্নত জায়গায় বাসা বাঁধি। যেমন গাছের ডালে, উঁচু দালান কোঠায় ও পাহাড়ের চূড়ায়। তেমনি মুমিনরাও উন্নত জায়গায় বসে। যেমন মসজিদে, মাদ্রাসায়, কোরআনের মজলিশে ইত্যাদি। ৩. ছিন্ন ভিন্ন হয়ে বসবাস করা এবং অন্যকে সাহায্য না করে নিজের প্রাণ নিয়ে পালানোও মুনাফিকের স্বভাব। আমরা এক জায়গায় চাক বেঁধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বসবাস করি। আমাদেরকে কেউ আক্রমণ করলে সবাই মিলে তার বিরুদ্ধে ছুটি।
মুমিনরাও তেমনি ঐক্যবদ্ধ হয়ে বসবাস করে এবং তাদেরকে কেউ আক্রমণ করলে এক সঙ্গে প্রতিহত করে। এবার বলো বন্ধু কারা বেশি শ্রেষ্ঠ? মৌমাছির কথা শুনে ভনভনে মাছি তার দিকে বাঁকা চোখে তাকালো এবং নাক ছিটকিয়ে দিলো ভোঁ দৌড়।
নাম : আব্দুল কাইউম
গ্রাম : কালিনগর
পৌ : বরগাছী হাট
থানা : ভোলাহাট
জেলা : চাঁপাইনবাবগঞ্জ

Share.

মন্তব্য করুন