নিশান বারান্দায় বসে পড়ছিল। একটু পরে নিশানের ভাবী নিশানের আদরের ভাতিজাকে নিয়ে বাসায় ফিরল। নিশান যেহেতু বারান্দায় বসে পড়ছে তাই ভাবী তার ছেলেকে বাড়ির আঙিনায় রেখে ঘরে প্রবেশ করল। নিশানের ভাতিজার নাম প্রিন্স। একটু পরে নিশান বই পড়া বাদ দিয়ে তার প্রিয় প্রিন্সকে নিয়ে একটু বাইরে ঘুরে আসতে চাইল।
নিশান বই রেখে আঙিনার দিকে তাকিয়ে দেখে তার প্রিয় প্রিন্স নাই। নিশান চিন্তায় পড়ে গেল। এইমাত্র ভাবী ওকে রেখে ঘরে প্রবেশ করল কিন্তু ও গেল কোথায়। প্রিন্স তো খুব বেশি হাঁটতে পারে না সবেমাত্র একটু একটু হাঁটতে শিখছে। নিশান ওকে খুঁজতে লাগল কোথায় গেল প্রিন্স। পুরো আঙিনা ভালো করে দেখে দৌড়ে গেল বাহিরে। বাহিরে গিয়ে প্রিন্সকে না পেয়ে ছুটে এলো আবার বাড়ির ভেতরে। নিশান ওকে জোরে জোরে ডাকছেÑ প্রিন্স প্রিন্স! কিন্তু কোন সাড়া পাচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবে নিশান ডাকলে প্রিন্স সাড়া দেয় কিন্তু আজ কোন সাড়া না পেয়ে নিশান ভয় পেয়ে গেল।
বাড়ির আঙিনায় এসে নিশান রান্না ঘরের দিকে ফিসফিস শব্দ শুনতে পেল। নিশানদের বাড়িতে রান্নাঘর বাড়ির উত্তর দিকে আর রান্নাঘরের পেছনে একটি পুকুর এবং পূর্ব দিকে একটি পুকুর। পূর্ব দিকের পুকুরে যাবার জন্য রান্নাঘরের সামনে দিয়ে একটি চিকন রাস্তা আছে। ফিসফিসানি শব্দ পেয়ে নিশান রান্নাঘরে দেখল যে প্রিন্স ওখানে আছে কি না। যখন সে ওখানে ওকে দেখতে পেল না তখন সোজা দৌড় দিল পুকুর ঘাটের দিকে। না পুকুর ঘাটেও তো কেউ নেই। আবার দৌড়ে বাড়িতে প্রবেশ করল নিশান। বাড়িতে ঢুকে দেখল ভাবী ঘর থেকে বাইরে বেরিয়েছে। নিশান ভাবিকে বলব ভাবী প্রিন্সকে তো পাচ্ছি না। ভাবী বলল, কেন এখনই তো ওকে এখানে রেখে গেলাম। গেল কোথায়? এরপর আবার ভাবী আর নিশান প্রিন্স প্রিন্স বলে ছোটাছুটি করে ডাকছে আর খুঁজছে। ওদের ছোটাছুটি দেখে পাশের বাড়ির থেকে এক ভাবী বেরিয়ে এলো। নিশান সব কিছু উনাকে খুলে বলল। ঐ ভাবী নিশানের কথা শুনে আবার রান্নাঘরে খুঁজতে গেল, ঘরে কাউকে দেখতে না পেয়ে ফিরে আসার সময় তার চোখে পড়ল রান্নাঘরের দরজার সাথে মিশে প্রিন্স ওখানে দাঁড়িয়ে হাসছে। উনি তখন নিশান আর ওর ভাবীকে ডাকলো। নিশান আর ভাবী ছুটে গেল ওখানে। ওদেরকে দেখে প্রিন্স আরো জোরে জোরে হাসতে লাগল…।
এখন মাঝে মাঝে প্রিন্স বলে চল লুকাই। নিশান বলে লুকালে কে খুঁজবে আমাদেরকে। প্রিন্স কখনো বলে ফুপি খুঁজবে, আবার কখনো বলে দাদি খুঁজবে আমাদেরকে।

Share.

মন্তব্য করুন