‘পিছলে পড়বে কিন্তু…., সাবধানে ওঠো। আরে ওই বাম দিকের বড় ডালটা বেয়ে ধীরে ধীরে এগুতে থাক। কাছে যখন যাবে একদম শব্দ করবে না।’ শাল গাছের নিচ থেকে হাসিবকে শিখিয়ে দিচ্ছিল চয়ন। অল্পক্ষণের মধ্যেই একটি তোতা পাখির বাচ্চা নিয়ে নেমে এলো হাসিব। অন্যদিকে জাহিদ, সৌরভ আর আশরাফ মিলে আরেক গাছ থেকে একটি ময়না পাখির বাচ্চা পেড়ে নিয়ে আসলো। উঁচু গড়ের ওপর প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো উঁচু উঁচু শাল গাছ। এক রূপময় পরিবেশের সৃষ্টি করেছে বদেশ্বরী এলাকায় অবস্থিত এই গড়টি। পঞ্চগড় জেলার উল্লেখযোগ্য পাঁচটি গড় হলো মীর গড়, হোসেন গড়, রাজন গড়, দেবন গড় ও ভিতর গড়। এছাড়াও এই বদেশ্বরী গড়ের মতো এরকম আরও কয়েকটি গড় আছে যা পঞ্চগড় জেলার ঐতিহাসিক নিদর্শন। এগুলোর মধ্যে কোন কোনটিতে প্রায় পাথরের মতো শক্ত মাটিতে উঁচু উঁচু শাল, কড়ই, সেগুন, কাঠসুপারি ও অন্যান্য অনেক প্রজাতির গাছ আছে। তবে শাল গাছগুলোই আশ্চর্য সুন্দর। আবার কোন কোন গড় নদীর কোল ঘেঁষে হওয়ার কারণে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাত্রা উপচে পড়ে সেখানে। ভালো রাস্তাঘাট না থাকার কারণে এখনও পর্যটকদের কোনো আসা যাওয়া নেই সেখানে। আর এ জন্যই মনে হয় অনেকটা প্রাকৃতিক ও নিরাপদই আছে বদেশ্বরী গড়। ইতিহাসের ভাষ্যমতে আগেকার দিনে এসব অঞ্চলে (পঞ্চগড় জেলায়) জন-মানুষের বসতি ছিল না। বন জঙ্গলে পরিপূর্ণ এ এলাকায় বাঘ থেকে শুরু করে সব ধরনের বন্য পশুদের এক মনোরম অভয়ারণ্য ছিল। পরে ধীরে ধীরে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন এসে বসবাস করতে আরম্ভ করে। কিন্তু প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য এ গড়গুলো তারা ধ্বংস করেনি বলে আজ পর্যন্ত আছে। কিছুদিন আগেই সেখানে হনুমান ও বানরের কিছুটা উপস্থিতি লক্ষ করা যেত। এখন বানরের সমান বড় বড় আকৃতির কিছু পেঁচা বাস করে সেখানে। বিশাল উঁচু উঁচু শাল গাছের ওপর গর্ত করে বাসা তৈরি করে টিয়া, ময়না, ডাহুক, মদনটাক, কাঠ ঠোকরা, কাকাতুয়া, চিল, শকুন ছাড়াও অন্যান্য হরেক প্রজাতির পাখি। এসব বাসায় পাখির পাশাপাশি অনেক বিষধর সাপও থাকে। গ্রামের দুরন্ত প্রকৃতির ছেলেরা ভয়ের তোয়াক্কা না করে পাখির বাচ্চা সংগ্রহ করে। মাঝে মাঝেই শুনতে পাওয়া যায় সাপের ছোবল খেয়ে অমুকের ছেলেটা মরলো, অথবা অমুকের ছেলেটা হাসপাতালে। কিছুদিন পর আবার মনে রাখে না কেউ।
সুনিপুণ সৌন্দর্যঘেরা সবুজের অভয়ারণ্য এ পরিবেশ অনেক ভালো লাগে পাখিদের। এখানে মা পাখিরা আদর যতœ করে তাদের বাচ্চাদের। বাচ্চা পাখিরাও দুষ্টুমিতে ভরিয়ে দেয় মায়ের মন। কিচির মিচির গানে সবসময় মুখরিত থাকে এ সবুজ কানন। জন-মানবের অনুপস্থিতে এ ডাল থেকে ও ডালে উড়ে গিয়ে বসা, কিংবা মনের আনন্দে নেচে বেড়ানো যেন অন্যরকম অনুভূতির জন্ম দেয় পাখিদের হৃদয়ে। কয়েকদিন আগেই পাশাপাশি দু’টি গাছে ডিম পেড়েছিল ময়না ও তোতা পাখি। ডিম থেকে ছানা ফুটানোর কয়েকদিন পরই প্রকা- এক ঝড় হয়। অনেক বাচ্চা মারা যাওয়ার পর কয়েকটা বাচ্চা কোন রকমে বেঁচে যায়। এর মধ্যে আঘাতপ্রাপ্ত একটি ময়না ও একটি তোতা পাখির ছানা এখনো উড়তে পারে না। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিণতির শিকার হয়ে ওরা হাসিবদের হাতে ধরা পড়লো। অনেক কান্নাকাটি করেও উদ্ধার হতে পারেনি তাদের হাত থেকে। মা পাখিরা খাদ্যের সন্ধানে কিছুটা দূরেই হয়তো গিয়েছিল। ওরা ফিরে আসার আগেই রওনা দিয়েছে ছেলেগুলো।
পাখির বাচ্চা হাতে নিয়ে মনের আনন্দে বাড়ি ফিরছে সৌরভরা। হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ বসে পড়ে সৌরভ, কারণ সে সবার ছোট। কিছুক্ষণ বিশ্রাম না নিয়ে উপায় নেই কারো। খানিক পর আবার তাড়াতাড়ি হাঁটা শুরু করার তাগাদা করে জাহিদ। বাসা থেকে খানিকটা দূরেরই পথ এই বদেশ্বরী গড়। প্রায় ১৩ কিলোমিটার রাস্তা। সারাদিনের ছুটাছুটিতে তাদের চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ। কিন্তু মনে আনন্দের ঢেউ। আশরাফের প্রস্তাব, “আমি পাখির ছানা দুটোর জন্য দু’টি নাম পছন্দ করেছি, একটির নাম ‘মিশু’ আরেকটির নাম ‘শিমু’।” চয়ন বলে, “না, আমার হারিয়ে যাওয়া পাখিটার নাম ছিল মুন্নি, তার স্মৃতি রক্ষা করতে আমি এরও নাম রাখবো ‘মুন্নি’। “তাহলে এবারও হারিয়ে যাবে তোর পাখি।” বলে উঠে জাহিদ। এই ঝগড়া করছো কেন? সৌরভের ছোট বোনের নাম ‘নিশু মণি’ সুতরাং মিশু ওদের বাসায় থাকলে কেমন হয়? আর চয়নদের বাসাতেই থাক মুন্নি, তাতে কোন সমস্যা আছে? প্রশ্ন করে হাসিব। সবাই একযোগে হাততালি দিয়ে সমর্থন জানায় হাসিবের প্রস্তাবকে। নিজের কথা না ভেবে হাসিব সুন্দর একটা মীমাংসা না করলে হয়তো ঝগড়ার অন্ত থাকতো না।
কয়েক দিনের বেশ আদর যত্ন পাওয়ার পরও মোটা তাজা হচ্ছিল না মিশু এবং মুন্নি। ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ছে পাখির ছানা দুটো। নানা জনের মতামত নিয়ে যত্ন নেয়া হয় তাদের। পরিশেষে ফলাফল শূন্য। কিছুতেই স্বাস্থ্যের উন্নতি নেই। হঠাৎ রাস্তার দিকে দৃষ্টি গেল সৌরভের। মসজিদে যাচ্ছিল নাহিদ ভাই। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ছোট থেকেই সৌরভকে খুব ভালোবাসে। তার কাছেই ভালো পরামর্শ নেয়া যায়। মসজিদ থেকে ফিরে আসার পর রাস্তায় দেখা করবে বলে ঠিক করলো সৌরভ। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকলো সে। জাহিদ, আশরাফ ও চয়নকে খবর দিল দ্রুত। তারাও এসে উপস্থিত হলো সেখানে। কিছুক্ষণ পরেই ফিরে এল নাহিদ ভাই। সবাই সালাম জানালো তাকে। “কেমন আছ সবাই?” বলে সৌরভকে কোলে নেয় নাহিদ। খুশির সাথে সবাই জানালো ভালোই আছে তারা। “এবার কোন কথা নেই আমাদের বাসায় চলো, তোমার খুবই দরকার।” বললো সৌরভ। “আচ্ছা চলো, মামা এবং মামী কেমন আছে?” জিজ্ঞেস করে নাহিদ। “সবাই ভালো কিন্তু ভালো নেই মিশু এবং মুন্নি।” বললো জাহিদ। “ওরা আবার কারা?” বিস্ময়ের সাথে প্রশ্ন করে নাহিদ। “ওই খাঁচার দিকে একবার তাকিয়ে দেখ। এরাই মিশু এবং মুন্নি।” উত্তর দেয় আশরাফ। “বাহ্! অনেক সুন্দর তো, কোথায় পেলে এদের? আগে বলোতো নাম দু’টি কে রেখেছে?” জানতে চায় নাহিদ। পাখির ছানা দুটি আগে কোথায় ছিল? কিভাবে ধরা হলো? নাম রাখা নিয়ে কি হলো? তার সমস্ত ঘটনা খুলে বলল জাহিদ, সৌরভ, চয়ন ও আশরাফ। এর মধ্যে পাশের বাসা থেকে কবির, শান্ত, মামুন, শাকিল ও তৌহিদ এসে উপস্থিত হয় সেখানে। নাহিদের পরামর্শ শোনার জন্য অপেক্ষা করছে সবাই। কিন্তু অল্পদামি পরামর্শ দেয়ার মানুষ নয় নাহিদ। সে চায় তার যে কোন উপদেশ যেন হয় মূল্যবান এবং জাতির জন্য উপকারী। সে বললো, “তোমরা পাখি দুটিকে নিয়মিত খাওয়াতে থাক। আমার সেরা পরামর্শ পাওয়ার জন্য তোমাদের একটু পরিশ্রম করতে হবে।” সবাই একযোগে বললো, “কি সেই পরিশ্রম? এই সামান্য বিষয়ে কি সহজ পরামর্শ দেয়া যায় না?” “সহজভাবে এর সমাধান হয় না ছোট্ট ভাইয়ারা। তোমরা যদি আমার শর্ত মানতে রাজি হও তবেই আমি সুন্দর পরামর্শ দিব।” বললো নাহিদ। সবাই বললো ঠিক আছে কী করতে হবে বলুন।
‘আমাদের স্বাধীনতা’, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধ’, ‘আমাদের বিজয়’ এই তিনটি রচনা খুব মনোযোগ দিয়ে ৫ বার করে পড়তে হবে, এখন থেকে ২৪ ঘন্টা সময়ের মধ্যে। কোন ধরনের গাফিলতি না পেলে আগামীকাল বিকেলে তোমাদের সাথে নিয়ে তৈরি করা হবে উত্তম পরামর্শ। কাজে লেগে যাও সবাই। আজ আমি আসি। চলে গেল নাহিদ। সবার চোখে মুখে আশ্চর্য কৌতূহল। কিন্তু ভেবে কোন লাভ নেই, নাহিদ ভাই মিথ্যা কথা বলার মানুষ নয়। তিনি নিশ্চয়ই ভালো কোন পরামর্শ দেবে যা আমরা সহজেই বুঝতে পারি। এমনটিই ধরে নিল ওরা। বাসায় গিয়ে রীতিমত পড়াশুনা শুরু করে দিল সবাই। খুব মনোযোগের সাথে। মুক্তিযুদ্ধের নানা গল্প এতোদিন অনেক শুনেছে তারা, কিন্তু এতো আবেগ ঝরা ইতিহাস ধারণা করেনি কখনো। লক্ষ লক্ষ মানুষ শহীদ হয় পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে। কত ঘরবাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় নর পিশাচরা। কত বাবা-মায়ের বুক খালি করে আদরের সন্তানদের হত্যা করে। আবার কত সন্তানের বুক খালি করে বাবা-মাকে হত্যা করে। অসহায় শিশু ও মা বোনদের অমানবিক নির্যাতন করে। লুটপাট করে নিয়ে যায় গরিব-দুঃখী মানুষের সম্পদ। খুন আর রক্ত দিয়ে ভরপুর করে বাংলার সবুজ জমিন। লাখো মানুষের আর্তনাদ হৃদয় গলাতে পারেনি হায়েনাদের। কোন কোন গ্রামকে নিস্তব্ধ করে দেয়া হয়েছিল লোকজনকে হত্যা করে। লাশের ওপর শেয়াল শকুনের নৃত্য-উল্লাস দেখে কেঁদেছে বিশ্ব। নাক বন্ধ করে অনেকে হেঁটেছিল লাশ আর রক্তের দুর্গন্ধ মৃত্যুপুরীতে। এসব পড়তে পড়তে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে সৌরভরা। বার বার পড়ে মুখস্থ হয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস।
পরদিন দেখা হয় নাহিদ ভাইয়ের সাথে। এবার আর দেরি সইছে না কারো, এমনটি করার কারণ কি তা জানার জন্য ছটফট করছে তাদের অবুঝ মন। “তোমরা সবাই পড়েছ তো? কে কে পড়োনি হাত তোলো।” বললো নাহিদ। সবাই একযোগে উত্তর দেয়, “মনোযোগের সাথে ৫ বার করেই পড়া হয়েছে সব। সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ দিয়ে আবার প্রশ্ন করলো নাহিদ, “স্বাধীনতা বলতে কী বুঝ সুন্দর করে বলতে পারবে কে?” আশরাফ বললো, “আমি পারবো।”
– ঠিক আছে বলো।
– স্বাধীনতা হলো অন্যের অধীন না থাকা, নিজের ইচ্ছামতো সবকিছু করার অধিকার লাভ করা। নিজের চাওয়া পাওয়া ও মতামত মন খুলে সবার কাছে বলতে পারা, নিজের খুশিমতো যে কোন পছন্দনীয় ভালো কাজ করার সুযোগ থাকার নামই স্বাধীনতা।
– সুন্দর হয়েছে। স্বাধীনতা সম্পর্কে আর কেউ কিছু বলতে চাও?
– “আমি মনে করি স্বাধীনতা প্রত্যেক নাগরিকের জন্মগত অধিকার।” বললো চয়ন।
– অনেক সুন্দর বলেছ। তোমরা সবাই খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ে এসেছ। আমি বিশ্বাস করি এভাবে জেনে শুনে কোন বিষয়ে আলোচনা করলে অনেক আনন্দ পাওয়া যায়। তোমরা কি মনে কর?
– “একদম ঠিক কথা। মুক্তিযুদ্ধ সমন্ধে এর আগে অনেক কিছু জানলেও নিজের মতো করে কাউকে বলার কোন যোগ্যতা আমাদের ছিল না। আপনি এলে আমরা অনেক কিছু মজায় মজায় শিখতে পারি।” আশরাফ বললো।
– “আচ্ছা সৌরভ, তোমাকে যদি কেউ তোমার আম্মুর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে দূরে কোথাও বন্দি করে রাখে, যেখানে তোমার আব্বু আম্মু কেউ দেখতে পাচ্ছে না। আর নানা রকম মজার মজার খাবার এনে দেয় তোমার স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য। সেখানে কি তোমার স্বাধীনতা থাকে কিংবা তুমি তাদের খাবার আনন্দের সাথে খেতে পারবে?” নাহিদের প্রশ্ন।
– “একদম না, আমি শুধু বসে বসে কান্না করবো আর আমার আম্মুর কাছে যেতে চাইবো। কারণ আমি আম্মুকে ছাড়া থাকতেই পারবো না।” উত্তর দেয় সৌরভ।
– “আমাদের স্বাধীনতা আমাদের বাড়িতে, উঠানে, স্কুলে, খেলার মাঠে, নানার বাসায়, মামার বাসায় যত খুশি হেসে খেলে বেড়ানোর মাঝে। বাঘের স্বাধীনতা গভীর বনে। সাপের স্বাধীনতা জঙ্গলে, গর্তে। মাছের স্বাধীনতা নদীর পানিতে, পুকুরে, সাগরে। এবার বলোতো পাখির স্বাধীনতা কোথায়?” আবার বলে উঠে নাহিদ।
– “আমরা আপনার কথা খুব সুন্দরভাবে বুঝতে পেরেছি ভাইয়া। আপনি এরকম আয়োজন না করলে আমরা অনেক ভুল কাজ করেই যেতাম, কিন্তু বুঝার ক্ষমতাটুকুও হতো না যে ভুল হচ্ছে। আসলে পাখির স্বাধীনতা তার নিজ নিজ বাসায়, মায়ের কাছে, গাছে গাছে, নীল আকাশে, বনে বাদাড়ে। সে কারণেই মিশু আর মুন্নি-এর দুঃখ আমরা বুঝতে পারিনি।” বললো হাসিব।
– “আমি আজকেই ওদের মুক্ত করে দেব। বদেশ্বরী গড়ের সেই গাছের কাছেই রেখে আসবো মিশু আর মুন্নিকে।” বললো সৌরভ। ভালো কিছু করার এই মোক্ষম সুযোগকে হাত ছাড়া করার মত নয়। তরিঘড়ি করতে থাকে কচি কিশোরেরা। জোগাড় করে কয়েকটি সাইকেল। রওনা দেয় একযোগে। উদ্দেশ্যে বদেশ্বরী গড়।
খাঁচা থেকে বের হয়ে মুক্ত আকাশে ডানা মেলে উড়তে থাকে মিশু আর মুন্নি। স্বাধীনতা এত সুখের হতে পারে হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে থাকে একদল অবুঝ কিশোর।

 

Share.

মন্তব্য করুন