সুন্দর বিকেল। পাতায় পাতায় আলোর নাচন। কোমল আলো। পথের দু’পাশে সবুজ গাছগুলো যেন আনন্দে দুলছে। মৃদু বাতাসের স্পর্শ লাগছে তো, তাই। এমন মনোরম পরিবেশে মন তো কবি হয়ে উঠবেই। মন তো চাইবেই কোথাও একটুু বসতে। ছুঁয়ে দেখতে ঘাসফড়িংয়ের সবুজ ডানা। অথবা খুলে বসতে গল্পের ঝুড়ি!

ওরা তিনজন। তিন বন্ধু। সবাই সবার হৃদয়ের কাছাকাছি। আসর সালাত শেষে বসে পড়ল রাস্তার একপাশে। প্রকৃতির পেলব শরীরে তারা যেন তিন প্রজাপতি। এই কথা, সেই গল্প। এই গান, সেই কবিতা। এভাবেই ওরা উড়ছে স্বপ্নের মতো। কথা যেন আর শেষ হয় না। আর কারো মুখ থেকেই হারিয়ে যায় না হাসির রেখা।

অবিরাম মুখরতায় হঠাৎ ছন্দপতন। সামিন কী যেন ভাবছে! আনমনে। সাকিব ও আরিফও নীরবে দেখছে তাকে। সাকিব বলল, কি রে কী ভাবছিস? আগের জায়গায় ফিরে এলো সামিন। বলল, রাস্তার পাশে এভাবে বসা কিন্তু ঠিক নয়। আর যদি বসতেই হয়, তাহলে কিছু দায়িত্বও পালন করা জরুরি হয়ে পড়ে! এমন কথা আর কখনো শোনেনি ওরা কেউ। আচ্ছা একটু খুলে বলবি? বলল, আরিফ।

Ñ শোন্! মহানবী সা. বলেছেন, “তোমরা রাস্তায় বসবে না। সাহাবীরা বললেন, আলাপ-আলোচনার জন্য তো আমাদের সেখানে বসতেই হয়। মহানবী সা. বললেন, তাহলে তোমরা রাস্তার হক আদায় করবে! রাস্তার হক আবার কী? Ñ বললেন সাহাবীরা। তিনি বললেন, তা হচ্ছে- দৃষ্টি নিচু রাখা, কাউকে কষ্ট না দেয়া, সালামের উত্তর দেয়া, সৎকাজের আদেশ করা এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করা।” (বুখারি ও মুসলিম)

তুই এসব কোথায় পেলি রে? -বলল সাকিব। সামিন বলল, প্রতিদিন একটি করেও যদি হাদিস শেখো, তাহলে তুমিও অনেক কিছু জানতে পারবে। মাথা নেড়ে সায় দিল সে।

আরিফ কোনো কথা বলছে না। মনে হচ্ছে অন্যমনস্ক। কিন্তু না। একটু পরেই সে বলতে লাগল, আমি ভেবে দেখলাম হাদিসটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাস্তায় বসা নানা ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে। যেমন, জোরে জোরে কথা বললে পথচারীদের কষ্ট হতে পারে। হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এমন কিছু চোখে পড়তে পারে, যা দেখার অনুমতি নেই। ইত্যাদি।

তিন বন্ধু উঠে দাঁড়াল। এমন সময় এক পথচারী সালাম দিল তাদের। তারা সমস্বরে বলে উঠল, ‘ওয়া-আলাইকুমুস সালাম।’
আবু মিনহাল

Share.

মন্তব্য করুন