আজকে তোমাদের চাঁদ সম্পর্কে বলবো। সাধারণ চাঁদ বলতে বুঝি রাতের আকাশে গোলাকার উপগ্রহ।
শনি গ্রহটিকে দ্বিগুণ দূরত্ব দিয়ে প্রদক্ষিণ করছে। এর পৃষ্ঠ দেখলে মনে হয় যেন সে ময়লা জমা করেছে। অন্য কোন শনির চাঁদের ক্ষেত্রে এমন হয়নি। কিন্তু ইয়াপিটাসের চেয়েও দূরে দিয়ে শনিকে প্রদক্ষিণ করছে ফিবি। ধারণা করা হয় যে, এটি শনির গ্র্যাভিটিতে ধরা পড়া একটি কাইপার বেল্ট অবজেক্ট। শনির অন্যান্য চাঁদ যে ডিরেকশনে শনিকে প্রদক্ষিণ করছে ফিবি করছে তার উল্টো ডিরেকশনে। অনেক দূর গিয়ে, তবে তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এটা খুবই অন্ধকার। শনির যে কোনো চাঁদের চেয়ে এটি বেশি অন্ধকার।
শুধু ইয়াপিটাসের কম উজ্জ্বল দিকের সাথেই এর তুলনা করা যায়।
ফিবি থেকে খুব দীর্ঘ সময় ধরে পারটিকেলের একটি স্থায়ী ধারা প্রবাহিত হচ্ছে।
ফিবির ভূ-পৃষ্ঠের গঠন এতটাই দুর্বল যে সূর্য থেকে আসা চার্জড পারটিকেলের সাথে সংঘর্ষই যথেষ্ট তা ভেঙে ফেলার জন্য।
স্পিটজার স্পেস টেলিস্কোপের সাহায্যে ফিবি সম্পর্কে একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করা গেছে।
ফিবি শনির চারিদিকে তার নিজের বলয় সৃষ্টি করে প্রদক্ষিণ করছে। এই বলয় পৃথিবীর অন্য যে কোনো বলয়ের চেয়ে বড়, ছড়ানো এবং কম ঘনত্বের।
এই বলয়টির ঘনত্ব এতটাই কম যে, এর প্রতি ঘন কিলোমিটারে মাত্র সাতটি বালির কণা পাওয়া যাবে। ফিবি ও তার বলয় ঘড়ির কাঁটা যে দিকে যায় সেদিক দিয়ে শনিকে প্রদক্ষিণ করে কিন্তু ইয়াপিটাস করে তার বিপরীত দিকে যায়। যত সময় গেছে এসব পারটিকেল ইয়াপিটাসের একদিকে জমা হয়েছে।
এরকমটা যদি না হতো ইয়াপিটাসের উজ্জ্বলতার কারণে বরফের ওপর এত পরিমাণ পানি জমা হতে পারত না। এক সময় এসব পারটিকেল শেষ হয়ে যেত। তার ওপর আবার বরফের আস্তরণ পড়ত। ইয়াপিটাসের দুই দিকেই সমান উজ্জ্বলতা থাকত। অর্থাৎ সাদা থাকত। কালো বা কম উজ্জ্বল বস্তু দ্রুত গরম হয় আর সাদা বস্তু দেরিতে। পদার্থবিজ্ঞানের এই নিয়ম ইয়াপিটাসের উজ্জ্বল দিকে জমতে চেষ্টা করে কোনো বাধা পায় না। কিন্তু অনুজ্জ্বল দিকে পানি বরফ হিসেবে জমতে দূরে থাকে, তরল হিসেবেও বেশিক্ষণ থাকতে পারে না। তার আগেই বাষ্পে পরিণত হয়ে যায়।
আমরা জানি বরফের ওপর পড়া আলো বেশির ভাগই প্রতিফলিত হয়। বরফই যদি না জমে তবে আলোর প্রতিফলন কিভাবে হবে?
একটি চাঁদ যার দুই দিকের রং দুই রকম। প্রায় ৩০০ বছরের পুরাতন একটি রহস্যের সমাধান হলো।
অনেক আগে একটি ব্যর্থ ধূমকেতু শনির গ্র্যাভিটিতে আটকে পড়ে। প্রায় কয়েক শ’ মিলিয়ন বা তারও বেশি এর আবর্জনা ইয়াপিটাসের একদিকে জমা হতে থাকে। সেই সাথে রং এরও পরিবর্তন হতে থাকে এবং সূর্যের আলো শোষণ করা বাড়তে থাকে।
আস্তে আস্তে যখন ঐ দিকের সমস্ত বরফ বাষ্পে পরিণত হয়ে যায় আলোর প্রতিফলন বরফের মত করে ভালোভাবে করার মত কিছু থাকে না। কক্ষপথে হেলান হওয়ার ও ঠিক নিরক্ষরেখা বরাবর পর্বতমালা তৈরি হওয়ার রহস্য কিন্তু এখনও রহস্যই আছে।

Share.

মন্তব্য করুন