একটুখানি শখ
মতিউর রহমান

দীর্ঘ দিনের খরা শেষে
বৃষ্টি পেল ধরা শেষে
গাছগাছালি ফিরে পেল
নতুন করে প্রাণ,
কৃষাণেরা ফসল ফলায়
আহ্লাদে গায় গান।

আকাশ থেকে ঝরছে বারি
মাঠে মাঠে বকের সারি
মাছ না পেয়ে কান্না করে
ক্ষেতের কানিবক,
খোকাখুকি মাঠে যাবে
একটুখানি শখ।

 

 

সবুজ দেশ
আমানুল্লাহ আমান

আমি থাকি সবুজ দেশে
শস্য ভরা মাঠ,
নদীর পাশে বাড়ি আমার
নৌকা ভরা ঘাট।

যৌবন ভরা নদী আমার
পানি টলোমল,
নদীর পাড়ে ফসল ক্ষেতে
পাখির কোলাহল।

সোনা রোদে নদীর পানি
দেখায় সোনার মত,
সারাটা দিন ছুটে চলে
বহে অবিরত।

 

ফুটপাথের শিশুটি
ওরাকা বিন বাশার

দিনের বেলায় হাঁটে মানুষ
রাত্রি বেলায় বিছানা,
শান মাথায় কাটায় সে রাত
ফুটপাথ তার ঠিকানা।
জীর্ণ, শীর্ণ বস্ত্র গায়ে
শীতে কাঁপে থরথর,
খড় বিচালি শয়ন মাথায়
ফুটপাথই আসল ঘর।
মায়ের কোলের সেই শিশুটি
আহারভাবে উদর ক্লেশ,
জঠর জ্বালায় সেই শিশুটি
অবিরত কাঁদছে বেশ।
কোলের শিশু সান্ত¡না পায়
ভাই পেয়েছে কাজের খোঁজ,
এমনি করে সেই ছেলেটির
কাটায় তার নিত্য রোজ।

 

 

আড়ি সাদা মেঘে
এম এ আশরাফ

টুনটুনিটা ডাকছে বসে
শিমুল গাছের ডালে
রোদ উঠেছে তাপ বেড়েছে
রহিম কাকার চালে।

মুরগিটা দেখ্ হাঁক ছেড়েছে
কুক্কুরু কুক ডেকে
বাছুর ছানা লাফ দিয়েছে
ডানে বামে বেঁকে।

পুকুর পাড়ে গরম হাওয়া
বইছে ঘাটের পিছে
মাছগুলো সব কাঁদছে দেখো
শেওলা গাছের নিচে।

মাঠের পরে ঝরছে আগুন
উদোম গায়ের গলে
রাখাল ছেলে সাঁতার কাটে
নদীর ঘোলা জলে।

গায়ের ছেলে দল বেঁধেছে
আড়ি সাদা মেঘে
পানির বুকে ঝাঁপ দিয়েছে
দারুণ গতি বেগে।

 

 

 

পাখির কলরব
হোসেন মোতালেব

স্রষ্টা পাকের করুণ কৃপায় সবুজ শ্যামল বনে
হরেক পাখি মিষ্টি সুরে ঢেউ তুলে যায় মনে
গাইছে পাখি মনের সুখে উদাস চারিদিকে
কখনো বা সুরের আবেশ হচ্ছে আবার ফিকে।

কে রোপেছে বন-বনানী কে ফেলেছে দানা
কে সৃজিল তাত্থেকে বন হয়নি আজো জানা
সেই না বনে মুক্ত মনে ডানা মেলে উড়ে
পাখপাখালির সখ্যতা হয় মিষ্টি মধুর সুরে।

রাতের শেষে ডাহুক ডাকে গহিন বিজন বনে
করুণ সুরে গান গেয়ে যায় কোকিল ক্ষণে ক্ষণে
ভর দুপুরে ঘুঘু ডাকে পাতার আড়াল থেকে
শীতের পাখির ডাক শোনা যায় সাগর নদী লেকে।

ময়না টিয়া শালিক ডাকে ফিঙ্গে নাচে ডালে
পায়রা, ঘুঘু, ময়ূর নাচে সুরের তালে তালে
হাজার পাখির কলরব আর হাজার পাখির মেলা
হাজার পাখির মিষ্টি সুরে কাটছে সারা বেলা।

 

 

মন ছুটে
সাইদুল ইসলাম

মন ছোটে চাঁদঢালা জ্যোৎ¯œার প্রান্তে
জোনাকির পিছু পিছু চাঁদের আলো আনতে
পাহাড়ের পাদদেশে কত কিছু জানতে
মৌমাছি হয়ে গিয়ে মধু নিয়ে আনতে।

মন ছোটে মনে বনে ফুল হয়ে হাসতে
নদী তীরে পাল তোলা নাও হয়ে ভাসতে।
কোকিলের মতো করে কুহু কুহু ডাকতে
প্রজাপতির রঙগুলো গায়ে গায়ে মাখতে।

মন ছোটে সাগরে, পাহাড়ি ঝর্ণায়
যেইখানে মারামারি আর কোন পর নাই।
যেইখানে সুন্দর, সবুজের শেষ নাই
একটাই দেশ শুধু আর কোন দেশ নাই।

 

 

গাঁও-গেরামের দস্যি ছেলে
আবুজার গিফারী নাঈম

গাঁও-গেরামের দস্যি ছেলে কোথায় তোরা গেলি,
আয় না সবাই জলদি ছুটে হা-ডু-ডু খেলি।
আয় ফিরে আয় সবুজ-শ্যামল ধান কাউনের গাঁয়ে,
যেথায় দিঘীর মাল্লা নাচে পাল তুলে তার নায়ে।

তপ্ত রোদে উঠোন জুড়ে গোল্লাছুটের খেলা,
আহ্! কী মজা এই খেলাতে এ ওকে দেয় ঠেলা।
বিকেল বেলা হিম বাতাসে রঙিন রঙিন ঘুড়ি,
চল্ না সবাই ঘুড়ির মতো নীল আকাশে উড়ি।

চল্ না সকল পাড়ার ছেলে দস্যিপনায় মাতি,
খেজুর-আতা-বেলের ক্ষেতে চল্ না রাতারাতি।
উদোম গাঁয়ে নদীর বুকে আয় না সাঁতার কাটি,
সন্ধ্যাবেলায় স্নিগ্ধ আভায় দিল কে করি খাঁটি।

 

বৃষ্টির খেলা
নাঈম হোসেন

নেমেছে আকাশ থেকে
নেমেছে পৃথিবীর বুকে
নেমেছে আজি বৃষ্টি,
আমি দেখে মুগ্ধ হলাম
মুগ্ধ আমার দৃষ্টি।
নীলাম্বর কেবলই
রং বদলায়
মেঘের আভায়,
নীল থেকে কালো
দেখতে লাগে ভালো
তার রূপ।
প্রকৃতি আজ নতুন করে
সেজেছে বহু দিন পরে,
যে দিকে তাকাই
দেখতে পাই
শুধুই সবুজ।

Share.

মন্তব্য করুন